সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা,২মিনিটে জেনে নিন - মর্নিং ওয়াকের উপকারিতা।
রোমানিয়া ভিসা আবেদন ফরম ২০২৪প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনার জন্য আলোচনা করতে চলেছি সকালে খালি পেটে হাঁটার
উপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
জানতে চান। তাহলে এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিতপড়ে নিন। তাহলে আপনি
জানতে পারবেন সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে। এবং আরো জানতে পারবেন
কেন সকালে হাটা প্রয়োজন।
বর্তমান সময়ে প্রতিটি মানুষের রোগ ব্যাধি প্রায় লেগেই থাকে। এই সমস্যা বিভিন্ন
কারণে মানুষের হয়ে থাকে। বর্তমান বিভিন্ন ধরনের ভেজাল যুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে
এবং অতিরিক্ত আরাম আয়েশের ফলে মানুষের এগুলো রোগের দেখা দিচ্ছে। অথচ আপনি একটু
সচেতন হলে এগুলো মারাত্মক রোগ থেকে অতি সহজেই বেঁচে যেতে পারেন। প্রতিদিন সকালে
খালি পেটে হাটার অভ্যাস করুন।এই অভ্যাস আপনাকে বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগ থেকে
মুক্তি পেতে সাহায্য করবে।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করুন। অন্তত ৩০ মিনিট
হাঁটার অভ্যাস করুন। এতে করে আপনার শারীরিক এবং মানসিক বিভিন্ন দিক দিয়ে সুস্থ
থাকতে পারবেন। আজকে আমি আপনাদের সুবিধার্থে সকালে খালি পেটে হাটার উপকারিতা
সম্পর্কে নিচে আর্টিকেলে আলোচনা করব। আশা করি পুরো আলোচনা জুড়ে সাথে থাকবেন।
চলুন দেরি না করে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
কেন সকালে হাটা প্রয়োজন
কেন সকালে হাটা প্রয়োজন এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব আপনাকে বেঁচে থাকার জন্য
সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন সকালে অন্তত ৩০মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এই অভ্যাস
আপনাকে বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে মুক্তি দান করবে। এছাড়া হাটাহাটির কারণে আপনার
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। কারণ হাঁটার জন্য আমাদের তেমন কোন বিশেষ দক্ষতা,
জিম বা যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই।
হাঁটাচলা মাঝারি থেকে ভারী শারীরিক ক্রিয়া-কলাপের অন্তর্ভুক্ত। সকালে হাঁটার
মাধ্যমে আমাদের ঘুমের মান উন্নত করার পাশাপাশি আমাদের স্মৃতিশক্তি এবং
চিন্তাভাবনা এবং শিক্ষার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে। এছাড়াও আপনি সকালে হাঁটার
মাধ্যমে টেনশন মুক্ত থাকতে পারবেন। এজন্য স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং টেনশন মুক্ত
থাকার জন্য প্রতিদিন সকালে অন্তত ৩০মিনিট হাঁটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই
উপকারী ।
সকালে হাটার জন্য আপনার কি প্রয়োজন
সকালে আপনি যখন হাঁটতে বাড়াবেন তখন আপনার জন্য অনেক কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়ে
থাকে। যেগুলো পরিধানের মাধ্যমে আপনি হাঁটাচলা কে আরামদায় করে তুলতে পারবেন।
সকালে হাটার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিচে দেওয়া হল-
- একজোড়া স্পট সু
- শর্টস বা লেগিংস
- ছোট টি-শার্ট
- স্পোর্টস ব্রা( মহিলাদের জন্য)
- চুলের ব্যান্ড (মহিলাদের জন্য)
- স্পোর্টস ওয়াটার বোতল
- ফিডব্যান্ড( হার্টবিট এবং স্টেপ ট্র্যাক করতে)
সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা
অনেকেরই জানার ইচ্ছা যে সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা কি সেই সম্পর্কে। তাই
আজকে আমি এই আর্টিকেলে সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করব। এছাড়া আরো আলোচনা করব সকালে হাটার জন্য কি প্রয়োজন এবং কেন সকালে
হাটা প্রয়োজন এগুলো বিষয় নিয়ে। মানুষের শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে হলে প্রতিদিন
সকালে অন্তত ৩০মিনিট হাঁটা একজন মানুষের জন্য খুব উপকার।
এতে করে মানসিক ও শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। এছাড়াও
সকালে হাঁটার মাধ্যমে মানুষের দুশ্চিন্তা কমে যায় এবং প্রচুর পরিমাণে ঘুমের
উন্নতি হয় এবং মানুষের ব্রেন সতেজ হয়। তাই এই বিষয়গুলো জানানোর জন্য আজকে এই
আর্টিকেলে সকালে খালি পেটে হাটার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা
হয়েছে।
আপনি যদি সকালে খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তাহলে
এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত করে নিন। তাহলে আপনি জানতে পারবেন সকালে
খালি পেটে হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া
যায়।
বিষন্নতা দূর করে
বর্তমানের সময়ে বিভিন্ন ধরনের রোগের মধ্যে বিষন্নতাকেও ধরা হয়। একে মুড
ডিসঅর্ডারও বলা হয়। কারণ এর কারণে ব্যক্তির মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে।
বিভিন্ন ধরনের দুঃখ হতাশা ক্রোধ ইত্যাদি রোগীর মনে জাগতে থাকে। এবং রোগীর
দৈনন্দিন জীবন কেও প্রভাবিত করতে পারে। এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য প্রতিদিন
সকালে হাঁটাচলা করলে এই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়।প্রতিদিন নিয়মিত সকালে
অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার ফলে আপনি এই বিষন্নতা সমস্যা থেকে সমাধান পেতে পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে
অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাত্রার কারণে সৃষ্ট সাধারণ সমস্যার মধ্যে ডায়াবেটিস একটি
রোগ। ডায়াবেটিস রোগী যদি প্রতিদিন সকালে নিয়মিত হাঁটাচলা করে তাহলে অনেক অংশে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে হাঁটার মতন শারীরিক
কার্যকলাপ করলে টাইপ ২ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যায়। এবং
মেটাবলিক সিনড্রোম এর ঝুঁকি কমিয়ে রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এজন্য
নিয়মিত সকালে হাটা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে উপকারী ভূমিকা পালন করে।
হার্ট ভালো রাখে
আমাদের হার্ট ভালো রাখতে প্রতিদিন সকালে হাঁটাচলা করার গুরুত্ব ব্যাপক। নিয়মিত
সকালে হাঁটাচলা করার মাধ্যমে হার্ট সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে
পারে। শুধু তাই নয় একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আপনি যত বেশি হাঁটবেন তত বেশি
আপনি হার্টের সমস্যার ঝুঁকি থেকে দূরে থাকবেন। এজন্য হৃদরোগে রোগে আক্রান্ত
রোগীদের নিয়মিত সকালে হাঁটাচলা অভ্যাস করা খুব উপকারী এবং জরুরী।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে
সকালে হাঁটাচলা ক্যান্সারের কোন ওষুধ নয় বা চিকিৎসা নয়। তবে হ্যাঁ নিয়মিত
সকালে হাঁটা চলার ফলে হার্টের যেই প্রবলেম সেগুলোর কিছুটা সমাধান পাওয়া যায়।
এবং বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত হাঁটা চলার কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি
অনেক অংশে কমিয়ে নিয়ে আসে। গবেষণায় বলা হয়েছে প্রতি সপ্তাহে 6 ঘন্টা হাটা
কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে এবং প্রতি সপ্তাহে তিন ঘণ্টা হাঁটা স্তন
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি
কমাতে প্রতিদিন সকালে হাঁটাচলা করা খুবই জরুরী।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে
প্রতিদিন সকালে অন্তত এক মাইল হাঁটার ফলে আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে। সকালের প্রাকৃতিক হওয়া শরীরকে ফুরফুরে করে এবং মস্তিষ্ককে খুব
ফ্রেশ করে দেয়। যার কারণে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। এছাড়াও যাদের অতি
তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়ার অভ্যাস আছে এ ধরনের রোগীদের সকালে হাঁটাচলা ফলে
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ভুলে যাওয়ার অভ্যাস দূর হয়ে যায়।
এজন্য সকালে হাঁটা চলার অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতেই শুধু কার্যকর নয়
বরং এটি ভুলে যাওয়ার অভ্যাসকে উন্নতি করতে পারে।
ওজন কমানোর জন্য
অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস এবং জীবন যাত্রাকে স্থূলতার প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা
হয়। এবং অন্য দিকে অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা শুধুমাত্র অতিরিক্ত খাওয়ার সাথেই নয়
শারীরিক কার্যকলাপ এবং ঘুমের গুণগত মানের কারণেও হতে পারে। এই ধরনের কার্যকলাপ
শরীরের বডি মাস ইনডেক্স(bmi) বাড়াতে পারে।এটি শরীরের ওজন বাড়াইয়া থাকে।
এমন অবস্থায় শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক খাদ্যাভাসের পাশাপাশি
স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন অপরিহার্য বলে মনে করা হয়। এজন্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে
সকালে হাঁটা খাবারে কোন বড় পরিবর্তন না করেই ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। একই
সাথে যাদের শরীরের ওজন অনেক কম তারাও সকালে হাঁটা চলার মাধ্যমে তাদের শরীরের পেশী
বৃদ্ধি করতে পারে এবং ওজন ও বৃদ্ধি করতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
সকালে হাঁটা চলার অভ্যাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আপনি
যদি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করেন এবং সকালে হাঁটা চলার অভ্যাস করেন
এতে করে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কারণ আপনি শুয়ে অথবা বসে
থাকার কারণে শরীরের মধ্যে এক ধরনের অলসতা কাজ করে।যা প্রতিদিন সকালে হাঁটাচলার
মাধ্যমে দূর করতে পারবেন এবং যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও
সাহায্য করে।
ক্লান্তি দূর করতে
সকালে হাটার আরো একটি উপকারিতা হলো এটি শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
আপনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ হওয়ার ফলে অথবা শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এক
ধরনের ক্লান্তি অনুভব করেন। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে অন্তত ৩০মিনিট হাঁটাচলা করেন
তাহলে শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে সতেজ করে তোলে।
ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে
প্রতিদিন সকালে ৩০মিনিট হাঁটাচলার ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। এর
কারণ হচ্ছে যে কোন ধরনের শারীরিক কাজ করার সময় ফুসফুস শরীরে অক্সিজেন নিয়ে
যায়। যা শরীরের শক্তি যোগায় এবং শরীর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে দেয়।
এবং একই সঙ্গে হৃৎপিণ্ড অক্সিজেন সরবরাহ করতে সহায়তা করে।
একইভাবে যখন পেশীগুলো অতিরিক্ত কাজ করে। তখন শরীরের ভেতর কার্বন ডাই অক্সাইড
তৈরির জন্য আরও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। যার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের হারও বেড়ে
যায়। সকালে নিয়মিত হাটা ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে বলে মনে করা
হয়।
ট্রেস রিলিফ
সকালে হাঁটা মানসিক চাপ দূর করার অন্যতম একটি কার্যকরী উপায়। একজন মানুষের
শরীরের উপর মানসিক চাপ বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যা শরীরের ভেতর বিভিন্ন রকমের
শারীরিক মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। নিয়মিত সকালে হাটার ফলে মস্তিষ্কে
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং মানসিক মেজাজ স্বাভাবিক রাখে। যা মানসিক চাপ কমাতে
সাহায্য করে। এজন্য সকালে হাটা মনকে সতেজ করে স্টেসের ঝুঁকি কমাতে কাজ করতে পারে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে
প্রতিদিন সকালে নিয়মিত হাটা হয়,তাহলে ক্রমবর্ধমান কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা
যায়। এজন্য বিশেষজ্ঞরা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য
প্রতি সপ্তাহে আড়াই ঘন্টা এবং কিশোর কিশোরীদের জন্য প্রতি সপ্তাহে এক ঘন্টা
মাঝারি ও ভারী ব্যায়াম করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে দ্রুত হাটা।
যার কারণে বৃদ্ধি পাওয়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সকালে হাঁটাকে অনেক
উপকারী বলে মনে করা হয়।
স্বাস্থ্যকর চুল
সাধারণত মহিলাদের ভিটামিন ডি সিরামের নিম্ন স্তরের কারণে চুল পরার কারণ হতে পারে।
এজন্য সকালে হাটার অভ্যাস চুল পড়ার এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।কারণ
সূর্যের রশ্মি ভিটামিন ডি এর উৎস। এজন্য সকালে হাটার মাধ্যমে সূর্যের রশ্মি থেকে
ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে পারে। আর এজন্য বলা যেতে পারে যে সকালে হাটা শরীরে ভিটামিন
ডি এর মাত্রা বাড়িয়ে চুলকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে
ত্বকের সুস্থতা দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে, একটি হল শরীরের অভ্যন্তরীণ অবস্থায়
এবং অন্যটি হলো বাহ্যিক অবস্থা। যার মধ্যে প্রধানত পরিবেশগত প্রভাব,ঘুমের
অভাব,ধূমপান, দূষণ, এবং দুর্বল পুষ্টি অন্তর্ভুক্ত।অপরদিকে আমরা যদি শরীরের
অভ্যন্তরীণ যত্নের কথা বলি, তবে এর জন্য শরীরের অভ্যন্তরে ফ্রি র্যাডিক্যাল (
ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল) প্রতিরোধ করা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করা
প্রয়োজন।
আপনি যদি নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ ব্যায়াম শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ায়
যার কারণে ত্বকের কোষগুলি রক্ষা করে। এছাড়াও নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও
বার্ধক্য বিরোধী প্রভাব প্রদর্শন করে। এজন্য সকালে হাটার অভ্যাস বার্ধক্যের লক্ষণ
গুলি দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
রোগ মুক্ত থাকতে
সকালে হাঁটাহাঁটি আপনাকে অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিকভাবে সুস্থ রাখতে ব্যাপক পরিমাণে
কাজ করে।একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে আপনি যদি হাঁটার মতন ব্যায়াম করলে শরীরে
অক্সিজেনের পরিমাণ ১১শতাংশ বেড়ে যায়। এজন্য শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং
শক্তিশালী হয়। সকালে হাটার প্রক্রিয়াটি নিউট্রোফিলস( এক ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা)
এবং প্রাকৃতিক ঘাতক রক্তকণিকা( কোষ যা প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে) এবং এর
মাত্রা উন্নত করতেও সাহায্য করে।এছাড়াও সকালে হাঁটা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী
করে শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে কাজ করে।
ভালো ঘুম
ঘুম প্রতিটি মানুষের জন্য উপকারী। মানসিক চাপ প্রায় ঘুম কেড়ে নেয় আর এজন্য
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম পাইনা।আপনি যদি সকালে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করেন
তাহলে আপনার রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হবে।কারণ হাঁটা অভ্যাস ঘুমের ব্যাঘাত
ঘটানোর কারণ গুলি কমাতে সাহায্য করে।যেমন মানসিক চাপ। এজন্য সকালে হাঁটার অভ্যাস
ঘুমের সময়কাল বৃদ্ধিতে কার্যকর বলে মনে করা হয়। তাই যাদের ঘুমের সমস্যা তারা
নিয়মিত প্রতিদিন সকালে হাঁটার অভ্যাস করুন।
মস্তিষ্ককে দুর্বল হওয়া থেকে রক্ষা করুন
মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যায়। বয়স সম্পর্কিত
মানুষের অসুস্থতা এড়াতে হাটা একটি দুর্দান্ত উপায়। নিয়মিত সকালে হাটা এবং
সারাদিন সক্রিয় থাকা মানুষের অসুস্থতার যেমন ভাস্কুলার ডিমেনশেয়ার ঝুঁকি
৭০%পর্যন্ত কমাতে পারে।এজন্য হাটা আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হতে
পারে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি
গবেষণায় দেখা গেছে সকালে হাঁটার অভ্যাস চোখের নার্ভ গুলো আরো বেশি শক্তিশালী
করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটাহাঁটি করলে চোখের নার্ভুলোতে দিনের প্রথম আলো
প্রবেশ করে। আপনি যদি প্রতিদিন কম্পিউটার স্কিনে অথবা মোবাইল স্ক্রিনে তাকিয়ে
থেকে চোখের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছেন। চোখকে কিছুটা আরাম দিতে এবং আপনার চোখ ভালো
রাখতে প্রতিদিন সকালে হাঁটার কোন বিকল্প নেই। এছাড়াও সকালে খালি পায়ে ঘাসের উপর
হাটলে দৃষ্টি শক্তি প্রখর হয়।
বার্ধক্য থেকে মুক্তি
নিয়মিত সকালে হাটা বার্ধক্যের দৃশ্যমান প্রভাব রোধ করতেও সাহায্য করে। কারণ
বার্ধক্যের সাথে সাথে পেশী হাড় এবং অন্যান্য শরীরের শারীরিক অবস্থার সাথে মানসিক
ক্ষমতাও হ্রাস পেতে শুরু করে। এজন্য সকালে হাঁটার কারণে বয়স্ক ব্যক্তিরা
বার্ধক্য জনিত অনেক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে। প্রকৃতপক্ষে নিয়মিত হাটা বেশি
শক্তিশালী করার সাথে অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগ অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ এবং মস্তিষ্কের
কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে
সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত সকালে হাঁটার কোন বিকল্প নেই। মানুষ বয়স
বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন রকমের বার্ধক্য জনিত সমস্যা সহ অন্যান্য সমস্যায়
জর্জরিত হয়ে থাকে। এগুলো সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সকালে হাটার কোন বিকল্প নেই।
সকালে হাটার কারণে শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ হয় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে
অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন।
সকালে হাটার কিছু টিপস
সকালে হাঁটার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিচে আলোচনা করা হলো-
- হাঁটার সময় আপনার ভঙ্গি সোজা রাখুন। বিশেষ করে আপনি যখন শরীরের আকৃতি ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে এই শারীরিক কার্যকলাপ করবেন।
- সকালে হাঁটার উপকারিতা আপনাকে প্রাণবন্ত করে তোলে এবং এর ফলে শরীরের ভিতর রক্ত সঞ্চালন মসৃণ থাকে। এজন্য আপনাকে সূর্যের প্রথম রশ্মি নিয়ে সকালে হাঁটার অভ্যাস করুন। এর ফলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি পাবেন।
- আপনি যদি আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ কমাতে চান তাহলে সকালে হাটার পাশাপাশি কিছুটা দৌড়ান।
- আপনি খাওয়ার পরপরই ব্যায়াম করবেন না
- সকালে হাঁটার সময় অতিরিক্ত পানি পান করবেন না।
- আপনি যদি সকালে হাঁটার অভ্যাস করেন তাহলে প্রথম কিছুদিন স্বাভাবিক হাটুন এবং আস্তে আস্তে গতি বাড়ান।
- সকালে হাটার উপকার পেতে প্রতিদিন অন্তত ৩০মিনিট হাঁটুন।
- আপনার বাসাতে যদি কোন পোষা প্রাণী থাকে তাহলে তাদের সাথে নিয়ে হাঁটুন।এতে করে হাঁটার সুবিধা পাবেন।
- কম লিফট ব্যবহারের মাধ্যমেও সকালে হাঁটার উপকারিতা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে যতটা সম্ভব সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
- বাড়ির কাছে অবস্থিত কোন বাজারে যেতে গেলে পায়ে হেটে যান।
- সকালে হাঁটার সময় সর্বদা পথচারী পথ পথ বা ফুট পথ ব্যবহার করুন। রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটবেন না।
শেষকথা-সকালে খালি পেটে হাটার উপকারিতা
মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করে
বার্ধক্য জনিত সমস্যা সহ অন্যান্য সমস্যা। কিন্তু আপনি চাইলে এগুলো সমস্যা থেকে
অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেন সকালে হাটার মাধ্যমে। একবার আপনি যদি এই হাঁটাকে আপনার
দৈনন্দিন রুটিনের একটি অংশ করে নিলে আপনি নিজের মধ্যে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন
অনুভব করতে সক্ষম হবেন।
সকালে হাঁটাকে একটি সম্পূর্ণ শারীরিক কার্যকলাপ হিসাবে গণ্য করা হয়। শরীরকে
রোগের বাসা বানিয়ে ঔষধের উপর নির্ভর না করে নিয়মিত সকালে হাঁটার অভ্যাস করুন
এবং শরীরকে সুস্থ রাখুন। এছাড়াও মানসিক শান্তি এবং ব্রেন কে সতেজ রাখতে সকালে
হাঁটার কোন বিকল্প নেই। প্রিয় পাঠক, আজকে আমি এই আর্টিকেলে সকালে খালি পেটে
হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আপনি যদি আর্টিকেলটি পুরো পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি বুঝতে পেরেছেন সকালে খালি
পেটে হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে। এই আর্টিকেল পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনি
আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এবং আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট
বক্সে জানিয়ে দিবেন, ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url