পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ ,(জেনে নিন নতুন নিয়ম)
আমেরিকার ভিসা খরচ 2024 - আমেরিকা ভিসার দাম কতআজকের আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম, দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে অনেকেই জানতে
চান পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪। তাই আপনাদের সেই প্রশ্নের সমাধান দিতে আজকের
এই আর্টিকেল পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ লিখা হয়েছে। বর্তমানে পুরনো MRP
পাসপোর্ট এর পরিবর্তে ই পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। আপনি চাইলেও আর MRP পাসপোর্ট
পাবেন না।
পাসপোর্ট রিনিউ কিংবা নতুন করে তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে ই পাসপোর্ট দেওয়া
হবে।এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট চালু করা হয়। আপনি
কোন দালাল ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে আপনারা পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনার ভোটার আইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে সহজেই পাসপোর্ট
আবেদন করতে পারবেন।
পাসপোর্ট এর ধরন অনুযায়ী কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন।সেই বিষয়ে আজকের পাসপোর্ট
করতে কি কি লাগে ২০২৪ এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। চলুন দেরি না করে আজকের এই
আর্টিকেল পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ বিস্তারিত পড়ে নেয়।
পাসপোর্ট এর ধরন সমূহ
- শিশুদের পাসপোর্ট।
- প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট।
- সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট।
বাংলাদেশের তিন ধরনের পাসপোর্ট তৈরি হয়। আবেদনকারীর বয়স হিসাবে পাসপোর্ট এর ধরন
ভিন্ন হয়। প্রতিটা ক্ষেত্রে ডকুমেন্টস প্রায় একই থাকলেও সরকারি চাকরিজীবীদের
ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডকুমেন্টস হিসাবে NOC এবং GO প্রয়োজন হয়।যার জন্য এই ধরনের
পাসপোর্টকে Government Order পাসপোর্ট বলা হয়।
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪
যদি কোন ব্যক্তি কাজের উদ্দেশ্যে, ভ্রমণের উদ্দেশ্যে অথবা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে
বাংলাদেশ থেকে অন্য কোন দেশে যেতে চাই তাহলে সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে পাসপোর্ট
দরকার। এজন্য জানা দরকার পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে। কি পাসপোর্ট করতে হলে প্রথমে
আপনাকে আবেদন করতে হবে। পাঁচ বছর কিংবা ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে
পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়।
তবে যাদের বয়স ২০ বছরের নিচে তাদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হবে। এছাড়াও
পিতা-মাতার আইডি কার্ড নাগরিক সনদপত্র প্রয়োজন পড়বে। এছাড়া আপনি কোন পেশায়
নিয়োজিত এটি প্রমাণের ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। এবং সরকারি চাকরিজীবীদের
ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডকুমেন্ট হিসেবে NOC এবং GO প্রয়োজন।
অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন ফি পরিশোধ করে, চালান রশিদ ও 3R Size এর ছবি প্রয়োজন
হবে।সাধারণত পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে আমরা তিন ভাগে ভাগ করতে পারি। শিশুদের
পাসপোর্ট, প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট ও সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট। বয়স ভেদে
পাসপোর্ট এর আবেদনের ক্ষেত্রে আলাদা ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়। চলুন এই সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নেই।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?
আগে MRP পাসপোর্ট প্রক্রিয়া চালু ছিল। তখন পাসপোর্ট করতে যে সকল কাগজপত্রের
প্রয়োজন পড়তো বর্তমানে ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর কিছু কাগজপত্রের পরিবর্তনে
এসেছে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ২০২২ সালে বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট
কার্যক্রম চালু হয়।ই পাসপোর্ট করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় সেগুলো
সম্পর্কে নিচে জানানো হবে। চলুন ই পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে জেনে নেই-
- জাতীয় পরিচয় পত্র (NID Card)
- ই পাসপোর্ট আবেদনের সামারি (Application Summary)
- পাসপোর্ট আবেদনের ফরম (Application Form)
- পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান/ ব্যাংক ড্রাফট কপি
- নাগরিকত্ব সনদ/ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
- পেশাগত সনদের ফটোকপি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে ঠিকানা প্রমাণপত্র হিসেবে ইউটিলিটি বিলের কপি (গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ)।
এই ডকুমেন্টগুলো ছাড়াও বয়স ভেদে পাসপোর্ট এর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ভিন্ন হয়।
যেমন সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং পাসপোর্ট ফি ভিন্ন
হয়। এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
শিশুদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
যেহেতু শিশুদের এনআইডি কার্ড না হওয়ার কারণে। শিশুদের ই পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি সংযুক্ত করা
বাধ্যতামূলক। কারণ পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি সংযুক্ত করার ফলে শিশুদের
প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সঠিকভাবে বিবেচিত হবে। ই পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে শিশুদের
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো নিচে দেওয়া হল-
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- অ্যাপ্লিকেশন সামারি
- আবেদনের কপি
- পাসপোর্ট ফি পরিশোধের A Challan কপি
- এক কপি 3R সাইজ সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ল্যাব প্রিন্ট কালার ছবি
- পিতা মাতার ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
সরকারি চাকরিজীবীদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
একজন সাধারণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ই পাসপোর্ট করতে যেগুলো ডকুমেন্টস প্রয়োজন।
সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রেও ই পাসপোর্ট করতে একই ডকুমেন্টস প্রয়োজন এবং সাথে
আরো কিছু অতিরিক্ত ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হয়। নিচে সরকারি চাকরিজীবীদের ই
পাসপোর্ট করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা তুলে ধরা হলো-
- জাতীয় পরিচয় পত্র (NID Card)
- ই পাসপোর্ট আবেদনের সামারি (Application Summary)
- পাসপোর্ট আবেদনের ফরম (Application Form)
- পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান/ ব্যাংক ড্রাফট কপি
- নাগরিকত্ব সনদ/ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
- পেশাগত সনদের ফটোকপি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে ঠিকানা প্রমাণপত্র হিসেবে ইউটিলিটি বিলের কপি (গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ)।
সাধারণ মানুষের তুলনায় সরকারি চাকরিজীবীদের যেগুলো কাগজপত্র বেশি প্রয়োজন পড়ে
তা হলঃ NOC (No Objection Certificate) বা GO (Government Order)। এছাড়াও যদি
কোন চাকরিজীবী চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত হন, ক্ষেত্রে PRL Order /পেনশন বই এর কপি
দিতে পারবেন। সাধারণত পেশার প্রমাণপত্র হিসেবে এই ডকুমেন্টগুলো দিতে হয়।
- NOC: যদি কোন সরকারি চাকরিজীবীকে তার নিজ প্রয়োজনে পাসপোর্ট করতে হয়। তাহলে তার কর্মস্থলের বিভাগ/ অধিদপ্তর/ মন্ত্রণালয় থেকে তাকে অনাপত্তি সনদপত্র (No Objection Certificate) নিয়ে পাসপোর্ট আবেদনে সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
- GO: যদি কোন সরকারি চাকরিজীবী সরকারি কাজে দেশের বাইরে যেতে হয়।তাহলে সরকারি আদেশপত্র বা Government Order পাসপোর্ট করার সময় আবেদনে সংযুক্ত করতে হবে।
হারানো পাসপোর্ট পেতে কি কি লাগে?
যদি কারো পাসপোর্ট হারিয়ে যায়।তাহলে স্থানীয় থানায় পাসপোর্ট হারানোর কথা
উল্লেখ করে একটি জিডি করতে হবে। এবং থানার নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর নিতে
হবে।পরবর্তীতে পাসপোর্ট এর তথ্য পেজের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয় পত্র এবং থানাতে
জিডি করার কপি সহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর অফিস কর্তৃপক্ষ
কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে নতুন পাসপোর্ট দেবে।
ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া কি পাসপোর্ট করা যায়?
যদি কোন পাসপোর্ট আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের কম অথবা ১৮ বছরের বেশি কিন্তু ২০
বছরের কম হয়।এবং যদি সেই ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড না হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ওই
ব্যক্তি জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে ওই পাসপোর্ট
আবেদনকারীর পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের কপি আবেদন কপির সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
পাসপোর্টের পেশা প্রমাণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস
অনেকেই হয়তো জানেন না,যে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট আবেদনকারীর পেশা
প্রমান করা অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়। তবে যদি আবেদনকারীর সঠিক ডকুমেন্টস থাকে
তাহলে তা পেশার প্রমাণপত্র হিসেবে জমা দিতে পারবেন। বিভিন্ন পেশার জন্য বিভিন্ন
ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়।নিচে তা তুলে ধরা হলো-
বেকার হলে
যদি পাসপোর্ট আবেদনকারী বেকার হয়। তাহলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভা থেকে
চেয়ারম্যান/ ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক বেকারত্ব সনদ।
শিক্ষার্থী হলে
যদি পাসপোর্ট আবেদনকারী শিক্ষিত হয়। তাহলে সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার
সার্টিফিকেট/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র/ স্টুডেন্ট আইডি
কার্ড।
প্রাইভেট সার্ভিস হলে
যদি পাসপোর্ট আবেদনকারী কোন কোম্পানিতে চাকরি করে।যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।
আবেদনকারীকে সেই প্রতিষ্ঠানের একটি অফিসিয়াল প্রত্যয়ন পত্র।
সরকারি চাকরিজীবী হলে
পাসপোর্ট আবেদনকারী সরকারি চাকরিজীবী হলে। তাহলে GO অথবা NOC। অথবা, চাকরি থেকে
অবসরপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে PRL Order /পেনশন বই এর কপি।
কৃষক হলে
আবেদনকারী কৃষক হলে জমির পর্চার ফটোকপি।
ব্যবসায়িক হলে
আবেদনকারী যদি ব্যবসায়ী হয়। তাহলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স এর
ফটোকপি।
শেষকথা- পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪
আজকের আলোচ্য বিষয় ছিল পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে। উপরের আর্টিকেলে উক্ত বিষয়ে
সম্পর্কে পরিপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ শুরু থেকে
শেষ পর্যন্ত পড়ে নেন তাহলে। আপনি পাসপোর্ট সম্পর্কিত সকল তথ্যের উত্তর পেয়ে
যাবেন। এমআরপি পাসপোর্ট প্রক্রিয়া বন্ধের পর ই পাসপোর্ট প্রক্রিয়া চালু করার পর
পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা এসেছে।
এবং এই পাসপোর্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহার কারি অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছে।
এছাড়া ও পাসপোর্ট সম্পর্কিত কোন কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানিয়ে
দিবেন। আশা করি আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন, ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url